একসময় মনে করা হত একটি উৎস্য থেকেই ধান বর্তমানের সব ঢোমেস্টিকেটেড বা পূর্ণচাষযোগ্য ধানের বিবর্তন ঘটেছে। কিন্তু সেই ধারণা আজ পরিত্যাক্ত। বর্তমানে প্রাপ্ত ধানগুলো ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতি থেকে বিবর্তিত হয়ে আজকের ধানে পরিণত হয়েছে। ... ...
খ্রীষ্টপূর্ব দেড় হাজার বছর আগে থেকে খ্রীষ্টের জন্মের পরে প্রায় আরো এক হাজার বছর পর্যন্ত ভারতের লোহা এবং তার বানানোর জ্ঞান-জন্মি একদম স্টেট অব্ দ্যা আর্ট ছিল। অনেক বিষয়ে ভারতে সেই সব পৃথিবীতে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিল। মিশরের পাবলিক যে সব মন্দির, পিরামিড এই সব বানিয়ে তাতে হেয়ারোগ্লিফিক্স নাকি কি সব দিয়ে ঢেকে দিয়েছিল, সেই সব বানাতে যে যন্ত্রপাতি ইত্যাদি লেগেছিল তা বানাতে নাকি ব্যবহার করা হয়েছিল ভারতীয় ইস্পাত। বলা হয়ে থাকে যে সেই সময়ে ভারত ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোন সভ্যতায় এমন লিখিত প্রমাণ পাওয়া যায় নি যে তারা ভারতের মতন এত উন্নত মানের ইস্পাত তৈরী করতে পারত। সেই সময়কার গ্রীক এবং ল্যাটিন লেখা লিখি পড়লে এটা বোঝা যায় যে এই লোহা-ইস্পাত ইত্যাদির ডিটেলস্ সম্পর্কে তারা বেশ অজ্ঞই ছিল। অবশ্যই তারা জানত কি ভাবে লোহা-ইস্পাত ব্যবহার করতে হয়, কিন্তু কি ভাবে লৌহ আকরিক থেকে লোহা নিষ্কাষণ করে তার থেকে ইস্পাত ইত্যাদি বানাতে হয় সেই সম্পর্কে তারা তেমন কিছু জানত না। ... ...
এই লৌহস্তম্ভ রয়েছে দিল্লীর কুতুব কমপ্লেক্সে। বর্তমানে বললাম এই জন্যই যে, এই স্তম্ভ দিল্লীতে চিরকাল ছিল না। মালটা প্রথমে কোথায় ছিল সেটা নিয়েও বিতর্ক আছে - তবে মোটামুটি সব বিজ্ঞরা আজকাল এই সিদ্ধান্তে এসে পোঁছেছেন যে, এই স্তম্ভ প্রথমে খাড়া করা হয়েছিল বর্তমান উদয়গিরি-তে, ওই ৪০০-৪৫০ খ্রীষ্টাব্দ নাগাদ। তারপর সেখান থেকে দিল্লীতে আসে। যদি ধরে নেওয়া হয় যে এই স্তম্ভ সত্যিই ১৬০০ বছরের পুরানো, তাহলে বছরের হিসাবে দেখতে গেলে দিল্লীতে এর ঠাঁই শেষ আটশো বছরের মত। কিন্তু লৌহস্তম্ভটি ক্ষয়ে যাচ্ছে না কেন? যেখানে আমাদের বারান্দার গ্রীল বছর চারেক রঙ করে মেনটেন না করলে ক্ষয়ে গিয়ে দফারফা, সেখানে আজ প্রায় ১৬০০ বছর ধরে এই লৌহ স্তম্ভ কি ভাবে না ক্ষয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে! এর পিছনের রহস্য কি? কোন বিশেষ ধরণের লোহার ব্যাবহার, নাকি বানানোর বিশেষত্ব, নাকি মৃদু আবহাওয়ার প্রকোপ? ... ...
সেই ১৮৩২ সাল নাগাদ ফ্যারাডে যখন ইলেক্ট্রোমেকেষ্ট্রির জনক হতে যাচ্ছেন তখন তিনি লণ্ডন রয়েল ইনষ্টীটিউটশনে – নিজের প্রথাগত শিক্ষা না থাকায় আত্মবিশ্বাস কিছু কম। তাই তিনি চিঠি লিখছেন হুইওয়েল-কে এই জানতে যে অথোরিটি এই ব্যাপারে কি মনে করে। ফ্যারাডে পজিটিভ এবং নেগেটিভ দিকের জন্য ঠিক কি নাম ব্যবহার করা ঠিক হবে সেই বিষয়ে পরামর্শ চাইছেন। এই সব চিঠি বাইরে রাখা থাকে না পাবলিক প্রদর্শনীর জন্য। আমাদের প্রোফেসর ট্রিনিটি কলেজের লাইব্রেরীয়ানকে বলে বিশেষ ব্যবস্থা করেছিলেন। লাইব্রেরীয়ান ভল্ট থেকে আসল চিঠি পত্র নিয়ে সে দেখালেন – সে অনেক চিঠি, সুন্দর করে রাখা আছে। বাঁধানো বইয়ের মত করে পাতায় পাতায় চিঠি গুলো আটকানো আছে। প্রথম দিকে ফ্যারাডের চিঠি এবং শেষের দিকে সেই চিঠির প্রেক্ষিতে হুইওয়েল এর উত্তর। এই চিঠি সব ব্যাখা করছিলেন লাইব্রেরীয়ান, কারণ সেই হাতের লেখা পড়া খুব দুঃষ্কর। এই ভাবেই দেখা গেল ১৮৩৪ সাল নাগাদ প্রথম প্রস্তাব করলেন হুইওয়েল ‘ক্যাথোড’ এবং ‘অ্যানোড’ শব্দের ব্যবহার। আরো বেশ কিছু ক্ষণ সময় কাটালাম – ... ...
সমকামিতাকে কিভাবে ডারউইনীয় বিবর্তনের কাঠামোয় রাখা যায়? সমকামীদের মস্তিষ্ক কি আর সবার থেকে আলাদা? ... ...
হিটলারের সময়ে ইহুদী-দের গ্যাস চেম্বারে ঢুকিয়ে মারতে যে গ্যাস ব্যবহার করা হত সেই ‘জাইকলন বি’ (Zyklon B) নামক বিষাক্ত গ্যাস উদ্ভাবনের পিছনেও হেবারের হাত ছিল। তো দেখা যাচ্ছে একধারে মানুষ-কে নতুন জীবনদান কৃষিকাজ ইত্যাদিতে কৃত্রিম সার ব্যবহারের দিগন্ত খুলে দিয়ে – আর অন্যদিকে বিষাক্ত গ্যাস আবিষ্কার করে মানুষ মারতে সাহায্য করা – হেবারের জীবন এই ভাবেই প্যারাডক্সে ভরে উঠেছিল। তিনি প্রায় ডঃ জেকিল এবং মিঃ হাইড হয়ে উঠেছিলেন একই সাথে। ... ...
এই লেখায় পাবেন - ১। প্রাচীন ডিএনএ এর সাহায্যে মানব প্রজাতির উদ্ভব ও পৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে গবেষণার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস; ২। আমাদের ফিনোটাইপগুলো, যাকে আমরা রেশিয়াল ক্যারেক্টারিস্টকস বলি যেমন চুল ও ত্বকের রং সেগুলোর বিবর্তন; ৩। মানুষের সাথে আর্কাইক হিউম্যান স্পিসিজ যেমন নিয়ান্ডারথাল ও দেনিসোভানদের মিশ্রণ ... ...
ইন্টারনেশ্যানাল এনার্জি এজেন্সি প্রতিবছর এক গাব্দা রিপোর্ট বের করে ‘ওয়ার্ল্ড এনার্জি আউটলুক’ নামে। সেইমত কিছুদিন আগে বেরিয়েছে ২০১৯ সালের রিপোর্ট – ৮১০ পাতার সুবিশাল রিপোর্ট। এতে তেল ছাড়াও আছে গ্যাস, কয়লা, বিদ্যুত সহ বাকি আরো কিছু রিন্যুউএবেল জ্বালানীশক্তি নিয়ে আলোচনা। তবে আমাদের এই লেখা তেল সংক্রান্ত বলে, ওই রিপোর্টে তেলের ব্যাপার-স্যাপার নিয়ে কি দাবী দাওয়া আছে তাই দেখব এখন। ... ...
সমকামিতাকে কিভাবে ডারউইনীয় বিবর্তনের কাঠামোয় রাখা যায়? মানুষের যৌন আচরণের কোন কোন দিকগুলো মানুষকে আর সমস্ত প্রাণীর থেকে আলাদা বানিয়েছে? ... ...
সমকামিতাকে কিভাবে ডারউইনীয় বিবর্তনের কাঠামোয় রাখা যায়? সমকামিতা কি বিশুদ্ধ প্রেমেরই একটা রূপ যেখানে সন্তানধারণের তাগিদের থেকে বৃহত্তর কোনো উদ্দেশ্য কাজ করে? ... ...
পৃথিবীর ভূতাত্বিক ইতিহাসে অনকবার স্থলভাগ ভেঙে গিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন নতুন মহাদেশ ৷ আগে স্থলভাগ ছিল একটাই ; সেটা ভেঙে তৈরি হয়েছিল ‘নতুন পৃথিবী’ বা আমেরিকা আর আন্টারটিকা ৷ আফ্রিকা ভেঙে ভারত চলে এসেছিল এশিয়ায় , আবার আমেরিকা ছিঁড়ে ব্রিটেন চলে এসেছিল ইউরোপে ৷ এইরকমই আরও একটা মহাদেশ ভাঙার কাজ চলছে ডালোলের ফাটলগুলোতে ; বলছে অনেক দূরের ভবিষ্যতের এক অন্য ভুগোলের রূপরেখা ৷ ... ...
গেম অফ থ্রোনস দেখে থাকলে মৃত্যুর পরও জন স্নো এর বেঁচে উঠবাদ কাহিনী জেনে থাকবেন। বিজ্ঞানীরা সেরকম কিছুরই চেষ্টা করেছেন, সাফল্য হিসেবে মস্তিষ্ককে আংশিকভাবে সক্রিয়ও করা গেছে। এই গবেষণায় গেম অফ থ্রোনস এর জন স্নো এর মত চেতনা ফিরিয়ে আনা বা সম্পূর্ণ জীবিত করা সম্ভব হয়নি বটে, তবে একে এই কাজের প্রথম পদক্ষেপ তো বলাই যায়।মার্কিন বিজ্ঞানীরা শূকরদের হত্যা করার চার ঘণ্টা পরও তাদের মস্তিষ্ক ... ...
[৭] অপরাবিদ্যাশেষ করার আগে জরুরি কথাগুলো আর একবার সারসংক্ষেপ করে বলি। ধর্মীয় আধ্যাত্মিক ধারণাগুলো কেন বিজ্ঞানের খাতায় পাওয়া যাবে না—বুঝে নেবার জন্য। ধর্ম এবং অধ্যাত্মবাদের তুলনায় বিজ্ঞান খুবই দুর্বল এবং ভিরু প্রকৃতির। ঈশ্বর আত্মা পরমাত্মা পুনর্জন্ম ব্রহ্ম জাতীয় অত্যন্ত গুরুগম্ভীর জটিল জিনিসগুলি প্রমাণ করার মতো মালমশলা বা সাহস কোনোটাই এর নেই। এটা তার নিতান্তই সীমাবদ্ধতা, বা অক্ষমতাও বলা যায়!ধর্ম ও আধ্যাত্মিক সাধনায় জ্ঞানলাভ করা এক দিক থেকে কত সহজ। এক একজন মুনি ঋষি সাধু সন্ত পি ... ...
[৬] সবজান্তা বনাম জ্ঞানার্থী উপরের আলোচনায় আমি এটা দেখাতে চেয়েছি, বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারার সাথে অধ্যাত্মবাদের বিরোধটা অত্যন্ত কঠোর বাস্তব। কী জানতে হবে তাতেও, কীভাবে জানতে হবে তা নিয়েও—বিরোধ এই উভয় মৌল বিন্দুতেই। তথ্য যুক্তি তর্ক সংশয় প্রমাণ অপ্রমাণ পরীক্ষা নিরীক্ষা পরিমাপন তুলনা বিচার বিশ্লেষণ—এই সমস্ত ব্যাপার ধর্মীয় চিন্তার পক্ষে শুধু অপাংক্তেয় নয়, বিপজ্জনকও বটে। “তাঁর ইচ্ছাতেই সব”, “তিনি যা করাচ্ছেন তাই হবে”, “মেলাবেন, তিনি মেলাবেন”—এই রকম ধারণা বা বিশ্বাস কোনো প্রমাণ অপ্রমাণের ধার ধা ... ...
[৪] এস্পার ওস্পার! এখন, এরকম একটা তর্ক অনেকে তোলেন, “আচ্ছা বেশ, বিজ্ঞানের সঙ্গে ধর্মের সমন্বয় সম্ভব নয়—এটা না হয় মেনে নিলাম। কিন্তু আপনাদের বিজ্ঞান কি প্রমাণ করতে পারে যে ঈশ্বর নেই? বিজ্ঞান কি দেখাতে পারে, আত্মার ধারণা ভুল? টেলিপ্যাথি অসম্ভব? ইত্যাদি। বিজ্ঞান কি এই সব নিয়ে কোনো পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখেছে যার মাধ্যমে এই সব ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়ে গেছে?”না, সত্যি কথা বলতে কি, আমি যদ্দুর জানি, বিজ্ঞান এ পর্যন্ত এরকম কোনো চেষ্টাই করেনি। কারণ, যুক্তিশাস্ত্রের বুনিয়াদি নিয়ম অনুযায়ী ... ...
বিজ্ঞানের অবদানের কারণে আমরা আজ জানি যে চাইল্ড এবিউজ বা শিশু নির্যাতন ব্যক্তির প্রাপ্তবয়স্ক জীবনেও বিভিন্ন খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। একটি সাম্প্রতিক গবেষণা এসম্পর্কে জানাচ্ছে আরও নতুন একটি তথ্য। এই গবেষণাটি আমাদের সামনে নিয়ে এসেছে শিশু নির্যাতনের ফলে ভুক্তভোগীর মস্তিষ্কের কিছু পরিবর্তনকে (লিম্বিক স্কারস) যা তার পরবর্তী জীবনে বিষণ্ণতা বা ডিপ্রেশনের মাত্রা ও হার আরও বাড়িয়ে দেয়! মুনস্টার বিশ্ববিদ্যালয় এর গবেষকগণ ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী ১১০ জনের মস্তিষ্ক স্ক্যান করেছেন এই গবেষণাটির জন্য। এই ১০০ ... ...
বেশ করেছে। হ্যাঁ মশাই, বেশ করেছে। ইন্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্রেসে কিছু তথাকথিত বিজ্ঞানী এসে বলেছেন, প্রাচীন যুগে শ্রীলঙ্কায় এয়ারপোর্ট ছিল। কৌরবদের শতভাই আদি যুগেই স্টেম সেল থেরাপির প্রকৃষ্ট প্রমাণ। আর নিউটন আইনস্টাইন এঁরা সব ভুল -- ফক্কা । অতি শীঘ্রই গ্রাভিটেশনাল ওয়েভ আর লেন্সিং ইফেক্ট-এর নাম সংশোধন করে নাকি বিজ্ঞানের সাথে সম্পর্ক বহির্ভূত কোনো কোনো ব্যক্তির নামে হয়ে যাবে। তা মশাই, বেশ করেছে বলেছে । এরকম আকছারই তো শোনা যায় আজকাল। আগের সায়েন্স কংগ্রেসেও তো শোনা গেছিল আদি যুগে বিমান ব্যবহারের ... ...
পঞ্চাশের দশকে এক ব্রাজিলিয়ান এন্টমোলজিস্ট (পোকামাকড় নিয়ে গবেষণা করে যারা তাদেরকে এন্টমোলজিস্ট বলে) একটা কেলেঙ্কারি ঘটিয়ে বসেন। তিনি ভাবছিলেন, কিভাবে হানি বি বা মৌমাছিদের তৈরি মধুর স্বাদ আরও বেশি বাড়ানো যায়। নরমাল টেস্টে মন ভরছিল না আরকি... তাই তিনি একটা কাজ করে বসলেন। তিনি ইউরোপিয়ান হানি বি এর এর বিভিন্ন প্রজাতির সাথে আফ্রিকান হানি বি এর ক্রস করে হাইব্রিড জাত তৈরি করেন। কিন্তু এর ... ...
গতকাল শুক্রবার ৮ই জুন, ২০১৮ তারিখে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের বাংলা নিউজ পোর্টাল আই ই বাংলায় আমার একটা লেখা প্রকাশিত হয়। সেই সংক্রান্ত ফেবুতে নিজের দেওয়ালে ও গুরুর ফেবু গ্রুপে কিছু আলোচনাও শুরু হয়েছে ও চলছে। খানিক সেইগুলো এক জাযগায় রাখার জন্যে আর খানিকটা এখানেও আলোচনা শুরু করার জন্য ও বিশেষত আলোচনার বাইরে কাজ করার ব্যাপারেও যদি সবাই মিলে কিছু একটা সলতে পাকানো যায় সেসবের জন্যে এখানে রাখলাম সেগুলো। ... ...
জ্যামিতির বনিয়াদ নিয়ে আমার এই লেখাটি ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে ... এখানে লেখাটা প্রায় একই ভাবেই দিলাম... আমার ব্যক্তিগত অনুরোধ, আমার লেখাটা না পোষালেও ওয়েবসাইট টায় ঘুরে আসতে ভুলবেন না... আজ ষষ্ঠ ও শেষ পর্ব, যা ২১শে জুন, ২০১৭ ( ইংরাজি সন) এ প্রকাশিত হয়েছিল... ... ...